ভেরিকোসিল সম্পর্কে
ভেরিকোসিল (Varicocele) হলো পুরুষদের অণ্ডকোষের চারপাশের শিরায় অস্বাভাবিকভাবে রক্ত জমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট এক ধরনের স্ফীত বা ফোলা অবস্থা। এটি টেস্টিকুলার শিরা এবং শুক্রাণু কর্ডের মধ্যে প্যাম্পিনিফর্ম ভেনাস প্লেক্সাসের বিস্তৃতি থাকে। একে সাধারণ ভাষায় “অণ্ডকোষে শিরা ফুলে যাওয়া” বললেও ভুল হবে না। এটি অনেকটা আমাদের পায়ের ‘ভারিকোজ ভেইন’-এর মতো, যেখানে রক্ত সঠিকভাবে উপরের দিকে উঠতে না পেরে নিচে জমে যায় এবং শিরা ফোলা দেখা যায়।
অণ্ডকোষের শিরাগুলিকে বলে Pampiniform Plexus। এই শিরাগুলোর মূল কাজ হলো অণ্ডকোষের রক্তচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা এবং শুক্রাণুর সঠিক উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় রাখা। যখন এই শিরাগুলির মধ্যে রক্ত জমে যায় বা রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, তখন অণ্ডকোষের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিঘ্নিত হয়, যা সরাসরি শুক্রাণুর গুণগত মান কমিয়ে দেয় এবং শুক্রাণুর উৎপাদন কমিয়ে ফেলে। ফলে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব রোগ সৃষ্টি হয়। যদিও এটি ভেরিকোসিলের Grade 1 এবং Grade 2 তে হয় না, তবে Grade 3 এবং Grade 4-এ অণ্ডথলি ব্যাথা এবং বন্ধ্যাত্ব রোগ হয়।
ভেরিকোসিল কীভাবে হয়?
আপনার শুক্রাণুযুক্ত কর্ড (Spermatic Cord) অণ্ডকোষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করে। যদি এই শিরাগুলোর ভালভ ঠিকমতো কাজ না করে, তাহলে রক্ত প্রবাহ সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না এবং শিরাগুলো প্রসারিত হয়। ফলে অণ্ডকোষের ক্ষতি ও উর্বরতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে (Puberty) ভেরিকোসিল তৈরি হয়।
- এটি প্রায় ৯০% ক্ষেত্রে অণ্ডথলির বাম পাশে হয়, কারণ বাম টেস্টিকুলার শিরার গঠনের কারণে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। আর ডান পাশে খুবই কম হয়।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথুন (Masturbation) করলে ভেরিকোসিল তৈরি হয়।
- শিরার ভালভ দুর্বল হওয়া।
- রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়া।
- অধিক সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা।
- অনেক ক্ষেত্রে এটি লক্ষণহীন থাকে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা, ভারী অনুভূতি ও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
ভেরিকোসিলের লক্ষণসমূহ:
✅ অণ্ডকোষে ফোলা ও শিরার স্পষ্টতা দেখা যায়।
✅ অণ্ডকোষের শিরা কেঁচোর মত ফোলা দেখায়।
✅ শিরায় টক্সিক ব্লাড জমার কারণে শিরার রং অণ্ডকোষের বাহির থেকে কালো দেখায়।
✅ পেঁচিয়ে গিয়ে স্পার্মাটিক কর্ডে ব্যথা হয়।
✅ অণ্ডথলি ফুলে যায় এবং ঝুলে যায়।
✅ অণ্ডকোষ ছোট হয়ে যাওয়া
✅ ভারী অনুভূতি বা টানটান ভাব অনুভব করা।
✅ Grade 3, 4 এর ভেরিকোসিল হলে অণ্ডথলিতে ব্যাথা করে।
✅ অণ্ডথলিতে চাকা বা পিণ্ড দেখা দেয়।
✅ শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গিয়ে পুরুষত্বহীনতা সৃষ্টি হয়।
✅ সেক্স ড্রাইভ কমে যায়।
✅ দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বা শারীরিক পরিশ্রম করলে ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া।
✅ একপাশের (বিশেষত বাম) অণ্ডকোষ ছোট হয়ে যাওয়া।
✅ উর্বরতার (Fertility) সমস্যা বা শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া।
তবে, অনেক ক্ষেত্রে ভেরিকোসিল কোনো লক্ষণ ছাড়াই থাকতে পারে এবং শুধুমাত্র ফার্টিলিটি টেস্ট বা মেডিকেল পরীক্ষায় ধরা পড়ে।
ভেরিকোসিল এর শ্রেণী বিভাগ:
1. Grade 1 (Subclinical Varicocele)
- চোখে দেখা যায় না।
- হাতেও অনুভব করা যায় না।
- শুধু আল্ট্রাসোনোগ্রাম বা ডপলার টেস্ট-এর মাধ্যমে শনাক্ত হয়।
- অনেক সময় বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষার সময় ধরা পড়ে।
2. Grade 2
- সাধারণত ছোট আকারের।
- চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় কিছুই টের পাওয়া যায় না।
- হাঁটার সময় বা হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় হালকা চাপ দিলে হাতে শিরা অনুভব করা যায়।
3. Grade 3
- চোখে দেখা যায় না।
- হাত দিয়ে স্পষ্টভাবে অনুভব করা যায়।
- বিশেষ করে দাঁড়িয়ে থাকলে বা চাপে দিলে স্পষ্ট টের পাওয়া যায়।
4. Grade 4
- সবচেয়ে গুরুতর পর্যায়।
- দাঁড়িয়ে থাকলে চোখে স্পষ্টভাবে ফোলা শিরা দেখা যায়।
- হাতে দিলে আরও পরিষ্কার টের পাওয়া যায়।
- অনেক সময় এই পর্যায়ে অণ্ডকোষে ঝুলে পড়ার মতো অনুভূতি হয় বা দৃশ্যমান হয়।
ভেরিকোজ শিরা কী?
ভেরিকোজ শিরা মূলত পায়ের শিরাগুলোর ফোলাভাব ও বর্ধিত রক্তচাপজনিত সমস্যা। এটি সাধারণত ফোলা, চুলকানি, ক্র্যাম্প, ভারী অনুভূতি ও ব্যথার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। গর্ভাবস্থা, অতিরিক্ত ওজন, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা, ধূমপান ও হরমোনজনিত পরিবর্তনের ফলে এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
ভেরিকোজ শিরা বোঝা:
ভেরিকোজ শিরাগুলি প্রাথমিকভাবে পায়ে প্রকাশ পায়, যার ফলে ফোলা, চুলকানি, ক্র্যাম্প এবং ভারী হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। গর্ভাবস্থা, বয়ঃসন্ধি এবং মেনোপজের সময় দীর্ঘায়িত নিষ্ক্রিয়তা, স্থূলতা, ধূমপান এবং হরমোনের পরিবর্তনগুলি ভেরোজোজ শিরাগুলিতে অবদান রাখার কারণগুলি অন্তর্ভুক্ত করে। হোমিওপ্যাথি ভেরোজোজ শিরা পরিচালনার জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল পদ্ধতির প্রস্তাব করে, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতায় সন্তোষজনক ফলাফলের সম্ভাবনার উপর জোর দেয়।
ভেরিকোজ শিরা ও ভেরিকোসিলের পার্থক্য:
বিষয় | ভেরিকোজ শিরা | ভেরিকোসিল |
---|---|---|
কোথায় হয়? | সাধারণত পায়ের শিরাগুলোতে | অণ্ডকোষের শিরাগুলোতে |
লক্ষণ | ফোলা, ব্যথা, ভারী অনুভূতি | ব্যথা, অণ্ডকোষ ছোট হয়ে যাওয়া, উর্বরতা সমস্যা |
প্রধান কারণ | দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, স্থূলতা, রক্ত প্রবাহের সমস্যা | টেস্টিকুলার শিরার রক্ত জমাট বা প্রবাহের বাধা |
Epididymal Cyst কী?
Epididymal Cyst হলো অণ্ডকোষের ঠিক পেছনে অবস্থিত একটি সরু নলাকার অংশ – যাকে বলে Epididymis – তার মধ্যে বা পাশে গঠিত একটি তরলপূর্ণ থলে বা গাঁট। এটি সাধারণত ছোট আকারের হয় এবং ভেতরে পরিষ্কার তরল (serous fluid) জমে থাকার কারণে স্পর্শে তুলনামূলকভাবে নরম অনুভব হয়।
এই ধরনের সিস্ট অনেক সময় স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠে এবং প্রাথমিক অবস্থায় তা ব্যথাহীন হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে তা বড় হলে অণ্ডকোষে টানটান ভাব, ভারী অনুভূতি বা হালকা ব্যথা দেখা দিতে পারে। এটি স্পর্শ করলে ছোট বলের মতো অনুভূত হয় এবং অবস্থানগতভাবে অনেকেই এটিকে “অণ্ডকোষে ছোট গুটি” বলে ব্যাখ্যা করেন।
কেন হয় Epididymal Cyst?
- শুক্রাণুর স্বাভাবিক চলাচলে বাধা তৈরি হলে।
- আঘাত বা ইনফেকশনের কারণে।
- হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
- বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কিছু পুরুষের স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবেও হতে পারে।
Epididymal Cyst এর লক্ষণসমূহ:
✔️ অণ্ডকোষের পাশে গোলাকার ফোলাভাব।
✔️ চাপ দিলে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি।
✔️ অনেক সময় যৌনমিলনের সময় বা পরে ব্যথা।
✔️ কিছু ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণে হ্রাস।
✔️ অনেক সময় রোগী এটি টের পান নিতম্বে ব্যথা, হালকা চাপ অনুভব, বা অণ্ডকোষে ভার লাগা দিয়ে।
Epididymal Cyst সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- এটি সাধারণত অণ্ডকোষের এক পাশে হয়ে থাকে, তবে কখনো কখনো দু’পাশেই দেখা যেতে পারে।
- অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি সফট এবং মোবাইল (মানে চামড়ার নিচে নড়ানো যায়) হয়।
- এটি ক্যান্সার নয়, তবে সময়মতো চিকিৎসা না করলে অস্বস্তি বাড়তে পারে বা বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ভেরিকোসিল এবং এপিডিডাইমাল সিস্ট এর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
আমাদের ঔষধসমূহ সেবনের নিয়ম:
বিঃদ্রঃ যেসকল পটেন্সি ঔষধ 30C দেওয়া হয়েছে, তা ক্রমান্বয়ে 200C, 1M, 10M, 50M, CM, MM পাওয়ার বাড়তে থাকবে।
সতর্কতা ও সংরক্ষণ বিধি:
- যেসকল খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
- পেঁয়াজ এবং রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- ধুমপান এবং মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকুন।
- গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মায়েদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।
- শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন।
What is the price of Varicocele Medicine and Epididymal Cyst Medicine in Bangladesh?
The latest price of Varicocele Medicine and Epididymal Cyst Medicine in Bangladesh is 3,550৳.
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে যোগাযোগ করুন:
ডাঃ মোঃ শাহ জালাল এইচ.এম.পি (ঢাকা) ডি.এইচ.এম.এস (ঢাকা) |
মাহবুব হোমিও ফার্মেসী কাঠপট্টি, ফরিদগঞ্জ বাজার, ফরিদগঞ্জ – ৩৬৫০, চাঁদপুর। +88 01711 999 468 |
ডাঃ মরিয়ম আক্তার ডি.এইচ.এম.এস (ঢাকা) |